আশুরার রোজার উপকারিতা ও সঠিক পদ্ধতি
আশুরার রোজার উপকারিতা ও সঠিক পদ্ধতি
আশুরা বলতে কী বোঝায়?
.
আশুরা শব্দটি আরবি ‘আশারাহ’ থেকে এসেছে। এর অর্থ দশ। আশুরা মানে দশম। ইসলামি পরিভাষায় মুহাররামের ১০ তারিখকে আশুরা বলে।
.
❑ আশুরার রোজার হুকুম ও কারণ:
.
নাসায়ির হাদিসে এসেছে, আশুরার রোজা ইসলামের প্রথম যুগে ফরজ ছিলো। এরপর রমাদানের ফরজ রোজার বিধান আসার পর এটি নফল হয়ে যায়।
.
ইবনু আব্বাস (রা.) হতে বর্ণিত; তিনি বলেন, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় আগমন করে দেখতে পেলেন ইহুদিরা আশুরার দিন রোজা রাখছে। নবিজি বললেন, ‘‘এটি কি?’’ তারা বললো, ‘এটি একটি উত্তম দিন। এ দিনে আল্লাহ তা‘আলা বনি ইসরাইলকে তাদের শত্রুর কবল থেকে বাঁচিয়েছেন। তাই মুসা (আ.) রোজা রেখেছেন।’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘‘মুসার (অনুসরণের) ব্যাপারে আমি তোমাদের চেয়ে অধিক হকদার।’’ অত:পর তিনি রোজা রাখেন এবং অন্যদের রোজা রাখার নির্দেশ দেন।” [বুখারি, আস-সহিহ: ১৮৬৫]
.
❑ আশুরার রোজার উপকারিতা:
.
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “আশুরার দিনের রোজার ব্যাপারে আমি আল্লাহর কাছে আশা করি—তিনি (এর দ্বারা) পূর্ববর্তী এক বছরের গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন।” [মুসলিম, আস-সহিহ :১৯৭৬]
.
❑ আশুরার রোজা রাখার সঠিক পদ্ধতি:
.
(১) সর্বোত্তম পদ্ধতি হলো, আশুরার আগের দিন ও আশুরার দিন, অর্থাৎ মুহাররামের ৯ ও ১০ তারিখে রোজা রাখা।
.
ইবনু আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেন, ‘যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আশুরার রোজা রাখলেন এবং (অন্যদেরকে) রোজা রাখার নির্দেশ দিলেন, তখন লোকেরা বললো, ‘হে আল্লাহর রাসূল! এটিতো এমন দিন, যাকে ইহুদি ও খ্রিস্টানরা মহানত্ব দেয়!’ তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘‘আগামী বছর এই দিন আসলে, আমরা (আশুরার দিনের সাথে) নবম দিনও রোজা রাখব ইনশাআল্লাহ।’’ বর্ণনাকারী বলেন, আগামী বছর আসার পূর্বেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইন্তেকাল হয়ে গিয়েছে। [মুসলিম, আস-সহিহ: ১৯১৬]
.
(২) কেউ চাইলে আশুরার দিন এবং এর পরের দিনও রোজা রাখতে পারেন। অর্থাৎ, ১০ ও ১১ তারিখ।
.
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘তোমরা ইহুদিদের বিরোধীতা কোরো; আশুরার আগে বা পরে আরও একদিন রোজা রাখো।’’ [আহমাদ, আল-মুসনাদ: ২১৫৫; বায়হাকি, আস-সুনানুল কুবরা: ৪৩১৫; হাদিসটি হাসান (আহমাদ শাকিরের তাহকিক)]
.
(৩) শুধু আশুরার দিন রোজা রাখাও জায়েয; এতে কোনো সমস্যা নেই। তবে, উত্তম হলো, দুইটি রোজা রাখা। [ইবনুল কায়্যিম, যাদুল মা‘আদ]
.
উল্লেখ্য, ৩০ আগস্ট আমাদের দেশে আশুরার দিন। সেই হিসেবে ২৯ ও ৩০ আগস্ট রোজা রাখবেন ইনশাআল্লাহ্। অথবা ৩০ ও ৩১ আগস্ট। তবে ২৯ ও ৩০ তারিখ রাখাই উত্তম হবে। কষ্টকর মনে হলে শুধু ৩০ তারিখে রাখবেন।
আরো নতুন টিপস পেতে সাথেই থাকুন।
ভালো লাগলে আমারদের সাইট থেকে ঘুরে আসবেন tipsnewsbd.com