কিভাবে পড়া উচিত?বই পড়ার ৭টি সঠিক পদ্ধতি নিয়ম

বই পড়ার নিয়ম

 কিভাবে পড়া উচিত?বই পড়ার ৭টি সঠিক পদ্ধতি


বই পড়ার এমন কিছু টেকনিক আছে যা জানলে তুমি অবাক হয়ে যাবে!
তুমি ভাববে,এতদিন আমি কী করেছি।তুমি যদি বই পড়ার সঠিক নিয়ম না জেনে থাকো তাহলে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে নাও।
ভুলেও কোথাও স্কিপ করবে না।
হতে পারে এই পোষ্ট তোমাকে অন্য পর্যায়ে নিয়ে যাবে।
তাহলে প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা জেনে নেয়া যাক,

   কিভাবে পড়া উচিত


শব্দ করে পড়া


যখন ছোট ছিলাম তখন মা বলতো, কিরে কী পড়িস শব্দ শোনা যায় না।মায়ের জন্য আরো জোরে জোরে পড়তাম।
কিন্তু পড়া আর মাথায় থাকতো না!থাকতো আমার মুখে।
এরকম লোক দেখানো পড়া যাবে না।

শব্দ করে পড়বে তবে অবশ্যই নিজের জন্য।নিজে ভালোভাবে শুনবে এমন।
শব্দ করে পড়লে পড়া দ্রত ব্রেনে পোচ্ছোয়।এতে অল্প পড়ে ভালো ফলাফল  করা যায়।
মনে করো তুমি বাংলা বই এর একটি গল্প পড়ছো।গল্পটি ১০ পেজ এর ।অনেক বড়।

শব্দ করে পড়লে অনেক এনার্জি নষ্ট হবে।অন্যদিকে তোমার আরো সাবজেক্ট পড়তে হবে।
এই পরিস্থিতে তোমার শব্দ না করে পড়াই উত্তম

এমন কিছু যা তোমার মুখস্থ করা লাগবে তা তুমি শব্দ করে পড়বে।১ লাইন শব্দ করে পড়বে আবার না দেখে শব্দ করে বলার চেষ্টা করবে।
এতে করে তোমার দ্রত পড়া মনে থাকবে।

শব্দ করে পড়লে কারো সমস্যার কারন হয় এমন কাজ করা যাবে না।

কখন পড়া উচিত

পড়ার সঠিক সময় বলতে তোমার উপর নির্ভর করে তুমি কখন পড়াশোনায় টাইম দিতে পারবে।
তবে বর্তমান পরিস্থিতে বিকালে সবাই গেম নিয়ে ব্যস্থ থাকে।তা না হলে আড্ডায় থাকে।
সেই হিসেবে সকালে পড়াই ভালো।
সকালে গোসল করে ফজরের নামাজ শেষ করে বই হাতে নিলে সুপার ফাস্ট গতিতে তোমার মাথায় কপি-পেষ্ট হবে।
যেহেতু রাতে তুমি ঘুমিয়ে ছিলে তাই সকালে মাথা ক্লিয়ার থাকে।এই সময়ে ব্রেনে যাই দিবে তাই ব্রেন নিয়ে নিবে।
সকালে কেউ তোমাকে বিরক্ত করবে না।এতে তুমি পড়াশোনায় পুরোপুরি মনোযোগ দিতে পারবে।
আমার পরামর্শ হচ্ছে,সকালে মুখস্ত পড়া শেষ করার চেষ্টা করো
অন্যদিকে সবাই ঘুমিয়ে সময় নষ্ট করছে আর তুমি সকালকে কাজে লাগাচ্ছো।
যার ফলে তুমি দ্রত এগিয়ে যাবে।


পড়ার সময় নোট খাতা

পড়ার সময় নোট খাতা ব্যবহার করা বুদ্ধিমানের কাজ।তোমার উচিৎ প্রথমে একটি নোট খাতা তৈরি করা।
তাতে কষ্ট হলে বাজার থেকে কিনে নিতে পারো।
নোট খাতা একটিই রাখা ভালো এবং এটিকে পড়ার সময় নিজের সজ্ঞে রাখবে।
নোট খাতায় যা খুশি তাই নোট করা যাবে না।

কিভাবে নোট করতে হয়

ধরো,গনিত বইয়ের এমন একটি অংক যা তুমি পারছ না।
অনেক চেষ্টা করেছো।
তারপর তুমি স্যারের সাথে দেখা করলে।স্যার তোমাকে এমন একটি কথা বললো যা বইতেও এত সহজ করে বলা ছিলো না!
যার ফলে এই অংক সমাধান করলে।
এমন গুরুতবপূর্ন কথা তুমি ভুলেও যেতে পারো।তাই তোমার উচিৎ হবে নোট করে রাখা।
কখনোই নোট খাতায় হাবিজাবি রাখা নোট করা যাবে না।

তুমি যখনই সমস্যায় পড়বে তখনই নোট খাতার সাহায্য নিতে পারো।


পড়ার রুটিন

ছোট সময় থেকে আমি নিজে কত যে পড়ার রুটিন বানিয়েছি তা আমি তোমাকে বলে বোঝাতে পারবো না।
কিন্তু মজার ব্যাপার হলো,আমি একটিও মেনে চলতে পারি নি।
দু-এক দিন মেনে চলে তারপর আবার সাবেক অবস্থা!
এরকম উদারহন আমি একা নই।আমার সাথে ব্যাপারটা অনেকেরই মিলে যাবে।
যাইহোক,পড়ার রুটিন মেনে চলতে পারলে ফলাফল তুমি নিজেই বুঝতে পারবা।
আমি পারিনি তাতে কী ?তুমি যদি পারো তাহলে আমি খুশি।
আমার না পারার কারনের মধ্যে সবচেয়ে বড় কারন হলো,আমি রুটিন তৈরি করতাম খুব কঠিন করে।
ভাবতাম ,আমি নিশ্চিত সফল হবো।
কিন্তু ফলাফল তো ভিন্নই আসতো।
তাই আমার পরামর্শ হচ্ছে ,তুমি যতটুকু পারবে সে হিসেবে রুটিন তৈরি   করো।
কঠিন করতে যেও না।
রুটিন তৈরি করার পর যতটা পারো মানার চেষ্টা করো।যদি কোন কারনে একদিন রুটিন মানা বাদ দাও তবেও পরের দিন থেকে মানার চেষ্টা করো।
হাল ছেড়ে দিও না,লেগে থাকো।

পড়াশোনা নিয়ে কিছু সমস্যা ও সমাধান


পড়ার সময় অন্য চিন্তা


বই পড়ার সময় অন্য চিন্তা আসতেই পারে।এতে দূচিন্তা করার কিছু নেই।এই সমস্যা তোমার একার নয় অনেকেরই।তবে পড়ার সময় অন্য চিন্তা দূর করার উপায় জানলে এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়।
পড়ার সময় অন্য চিন্তা বিভিন্ন জনের বিভিন্ন রকম হতে পারে।
তবে এই চিন্তা পড়ার ব্যাপক  মূল্যবান সময় নষ্ট করে!
এর থেকে পরিত্রান না পেলে তোমার কাঙ্ক্ষিত লক্ষে পোচ্ছোতে পারবে না।

যে কাজই করো না কেন তা সম্পর্ন করে করো।না পারলে কিছু অংশ সম্পর্ন করো।
কোনো কাজ ফেলে রাখলে তা তোমাকে পরবর্তী সময়ে প্রচুর ভাবাবে।
কোনো কিছু করার আগে সে বিষয়ে না ভাবাই ভালো।যে সময় কাজটি করবে সে সময়ই ভাবা উচিৎ।

এমন কিছু না করাই ভালো যা তোমাকে পরিবর্তী সময়ে অনেক ভাবাবে অথবা কষ্টের কারন হবে।

বই পড়ার সময় বিভিন্ন চিন্তা আসতেই পারে তাই তোমার চিন্তা তোমাকেই সমাধান করতে হবে।
বাসায় বিড়িয়ানী রান্না করেছে তুমি ভাবছো পড়া শেষ করে বিড়িয়ানী খাবে।
দেখা গেল,পড়া শুরু করার সাথেই সাথেই বিড়িয়ানীর কথা মাথায় চলে এলো।
এক্ষেত্রে তোমার উচিৎ হবে বিড়িয়ানী খাওয়া শেষ করেই পড়াশোনা করা।
 

অন্যদিকে ইংরেজি বই হাতে নিলে মনে হয়, ইংরেজি অনেক কঠিন !
তখন ইংরেজি রেখে দিয়ে গনিত হাতে নেই ।
কিন্তু ফলাফল তো একই!
এসব সমস্যা প্রতিদিনই ফেস করতে হয়।
ছোট সমস্যা কিন্তু ব্যাপক প্রভাব ফেলে।
অতি জরুরী এ সমস্যা সমাধান করা উচিৎ।
এর ভালো একটি সমাধান হলো , পড়ার টেবিল থেকে বই অনেক দূরে রাখা যাতে করে বই আনা একটু কষ্টকর হয় এবং টেবিলে একটি মাত্র বই রাখা।


দীর্ঘ সময় পড়া


ভালো ছাত্র হতে চাইলে তোমাকে অবশ্যই দীর্ঘ সময় পড়তে হবে।মূলকথা হলো, দীর্ঘ সময় পড়ার প্রতি মনোযোগ ধরে রাখাটা চারটি খানি কথা নয়।
তবে কিছু ট্রিক খাটালে দীর্ঘ সময় পড়া কোনো ব্যাপারই না।
দীর্ঘ সময় পড়ার উপায়
আরামদায়ক স্থান পরিহার করতে হবে।এমন কী পাখা বন্ধ করা যেতে পারে।
সবসময় বইয়ের দিকে চেয়ে থাকা যাবে না।প্রতি ২ মিনিট পর পর অন্যদিকে চেয়ে চোখকে রিফ্রেশ করতে হবে।
প্রতি ২০ মিনিট পর পর বাসার বাইরে থেকে ঘুরে আসতে হবে।তবে কারো সাথে দেখা না করা যাবে না।হাটাহাটি করলে আরো ভালো হয়।
অংশ অংশ করে পড়ো।কোনো অংশ শেষ করতে পারলে এর জন্য পুরষ্কার এর ব্যবস্থা রাখতে পারো।হতে পারে সেটি কোনো খাবার।কোনো অংশ শেষ করতে পারলে ৫টি বাদাম খেতে পারো।


পড়ার সময় ঘুম


পড়ার সময় ঘুম ব্যাপকভাবে আক্রমন করে থাকে।কিন্তু ঘুমাতে গেলে ঘুম আসে না।
পড়ার সময় ঘুম তাড়ানোর কৌশল হচ্ছে আরামদায়ক স্থান পরিহার করা।
পড়ার সময় আরাম থেকে দূরে থাকতে হবে।
তারপরও যদি কাজ না হয় তাহলে নিজে চা বানিয়ে ফ্যাক্স এ রেখে অল্প করে মাঝে-মাঝে খেতে পারো।
তবে কাউকে অর্ডার করবে না।নিজের কাজ নিজে করা ভালো।
যখন  তুমি নিজের কাজ নিজে করবে তখন তুমি আত্মা তৃপ্তি লাভ করবে।
যদি চা বানাতে না পারো তাহলে তোমার আম্মুর কাছ থেকে শিখে নাও।
নিজে নিজে যখন চা বানাবে তখন খুব সর্তকতার সজ্ঞে কাজ করবে।

আর যদি তোমার বাবার টাকা থাকে তাহলে কফি খেতেই পারো।
কফি বেশি পান করলে আবার রাতে ঘুম হবে না।তাই ব্যালেন্স করে পান করলে সবচেয়ে ভালো হয়।

উপসংহারঃ 

উপরের টিপস গুলো মানতে পারলে তুমি হিরো,পারলে তুমি জিরো!টিপস সবাই দিতে পারে।যেমনটি আমি দিয়েছি!
মেনে চলতে পারে কয়জন?যারা মেনে চলতে পারে তারাই সফল!
এরকম আরো টিপস পেতে আমাদের ব্লগ থেকে ঘুরে আসার অনুরোধ রইলো।
ধন্যবাদ 
খোদা হাফেজ

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url